খুলনা | মঙ্গলবার | ০১ জুলাই ২০২৫ | ১৭ আষাঢ় ১৪৩২

উচ্চ আদালতের নির্দেশনা অনুসারে

তামাক পণ্যের মোড়কের উপরের দিকে ছবিসহ স্বাস্থ্য সতর্কবাণী প্রদানের আহবান

নিজস্ব প্রতিবেদক |
১২:৫৮ এ.এম | ১১ অগাস্ট ২০২১

সর্বোচ্চ আদালতের নির্দেশনা অনুসারে সকল তামাক পণ্যের মোড়কের উপরিভাগে সচিত্র স্বাস্থ্য সতর্কবাণী প্রদান করা জরুরি। পাশাপাশি বিদ্যমান সচিত্র বার্তাগুলোর ছবি ও বার্তা পরিবর্তন করা প্রয়োজন, যাতে করে মানুষ সহজেই সচেতন হতে পারে। একই সাথে চর্বণযোগ্য তামাকের বাজার ব্যবস্থার উপর নজরদারি করা উচিত যেন সচিত্র স্বাস্থ্য সতর্কবাণী নিশ্চিত করার পাশাপাশি কর আদায়ের মাধ্যমে রাজস্ব বৃদ্ধি করা যায়।
মঙ্গলবার বেলা ১১টায় টোব্যাকো কন্ট্রোল এন্ড রিসার্চ সেল (টিসিআরসি), ঢাকা ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভির্সিটি, ওয়ার্ক ফর এ বেটার বাংলাদেশ (ডাব্লিউবিবি) ট্রাস্ট, বাংলাদেশ নেটওয়ার্ক ফর টোব্যাকো ট্যাক্স পলিসি (বিএনটিটিপি) এবং বাংলাদেশ তামাক বিরোধী জোট (বাটা)-এর আয়োজনে ‘আইন অনুযায়ী তামাকজাত দ্রব্যের মোড়কে সচিত্র স্বাস্থ্য সতর্কবাণী বাস্তবায়ন-বর্তমান অবস্থা’ শীর্ষক গবেষণার ফল প্রকাশ অনুষ্ঠানে বক্তারা এ অভিমত ব্যক্ত করেন।
টিসিআরসির প্রেসিডেন্ট সংসদ সদস্য ব্যারিস্টার শামীম হায়দার পাটোয়ারী এমপির সভাপতিত্বে সভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতা করেন নাটাব-এর প্রেসিডেন্ট মোজাফ্ফর হোসেন পল্টু। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তৃতা করেন জাতীয় তামাক নিয়ন্ত্রণ সেলের সমন্বয়কারী অতিরিক্ত সচিব হোসেন আলী খোন্দকার, ঢাকা ডেন্টাল কলেজের সাবেক উপাধ্যক্ষ আ ফ ম সারোয়ার, তামাক বিরোধী জোটের সমন্বয়কারী সাইফুদ্দিন আহমেদ এবং দ্য ইউনিয়ন কারিগরী পরামর্শক এড. সৈয়দ মাহবুবুল আলম। মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন টোব্যাকো কন্ট্রোল এন্ড রিসার্চ সেলের সহকারী গবেষক ও প্রোগ্রাম ম্যানেজার ফারহানা জামান লিজা। ঢাকা বিশ^বিদ্যালয়ের অর্থনৈতিক গবেষণা ব্যুরো প্রোগ্রাম ম্যানেজার (তামাক নিয়ন্ত্রণ প্রকল্প) হামিদুল ইসলাম হিলে­ালের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে শুভেচ্ছা বক্তৃতা করেন ঢাকা ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির সহযোগী অধ্যাপক ও টিসিআরসির সদস্য সচিব মোঃ বজলুর রহমান।
মূল প্রবন্ধে ফারহানা জামান লিজা বলেন, এ গবেষণায় দেশের ১৬টি জেলা ও ১৬টি উপজেলা হতে মোট ৯৫১ টি তামাকপণ্য সংগ্রহ করা হয়। গবেষণায় দেখা যায়, ৭৯% তামাকপণ্যে সচিত্র স্বাস্থ্য সতর্কবাণী মুদ্রণ হলেও তাতে অনেক ফাঁক ছিল। আইন অনুযায়ী মোড়কের ৫০ শতাংশ এলাকা জুড়ে সচিত্র স্বাস্থ্য বার্তা প্রদানের হার মাত্র ৬৯%। মোড়কের উভয় দিকে সচিত্র স্বাস্থ্য সতর্কবাণীর মুদ্রণের হার ৪৪% এবং ১৭% মোড়কে নিদির্ষ্ট মেয়াদের ছবি পরিলক্ষিত হয়নি। এছাড়া কোন সিগারেটের কার্টনেই সচিত্র স্বাস্থ্য সতর্কবাণী পাওয়া যায়নি। ৯০% মোড়কের সচিত্র স্বাস্থ্য সতর্কবাণী ব্যান্ডরোল দিয়ে ঢেকে থাকতে দেখা গেছে, ৪৯% মোড়কেই “শুধুমাত্র বাংলাদেশে বিক্রয়ের জন্য অনুমোদিত” মর্মে কোন বাণী প্রদান করা হয়নি। আইনের ১০ ধারার সব উপধারা মেনে সচিত্র সতর্কবাণী প্রদানের হার মাত্র ১% শতাংশের কম। কোভিড-১৯ সময়কালে তামাক কোম্পানিগুলো আরো বেশি আইন লঙ্ঘন করছে বলে তিনি উলে­খ করেন। তিনি আরো বলেন, আইনে উপরের দিকে ছবি মুদ্রণের কথা থাকলেও ৮২% মোড়কেরই নিচের দিকে ছবিসহ স্বাস্থ্য সতর্কবাণী মুদ্রিত হয়েছে।  মূল প্রবন্ধে আইন বাস্তবায়নে বেশ কিছু সুপারিশ তুলে ধরেন তিনি। 
উক্ত ওয়েবিনারে সারাদেশের সরকারি-বেসরকারি ও আর্ন্তজাতিক সংস্থার প্রতিনিধি ও স্থানীয় পর্যায়ের তামাক নিয়ন্ত্রণ সংগঠনের প্রতিনিধিবৃন্দ ও অংশগ্রহণ করেন।