খুলনা | শুক্রবার | ০৩ মে ২০২৪ | ২০ বৈশাখ ১৪৩১

সুন্দরবনের ভেতর দিয়ে বিপজ্জনক পণ্য পরিবহন বন্ধের দাবি

খবর প্রতিবেদন |
০৬:০৫ এ.এম | ০৬ জুলাই ২০২১

অবিলম্বে রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্রসহ সব কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র বাতিল ও সুন্দরবনের ভেতর দিয়ে কয়লাসহ সবধরনের বিপজ্জনক পণ্য পরিবহন বন্ধ করার দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) ও সুন্দরবন রক্ষা জাতীয় কমিটি। গতকাল সোমবার (০৫ জুলাই) অনলাইনে সংগঠন দুটির যৌথ আয়োজিত ‌‘রামপালমুখী ভারতীয় কয়লা, বিপদাপন্ন সুন্দরবন ও ইউনেস্কো বিশ্ব ঐতিহ্য কমিটির আসন্ন সভা’ শীর্ষক এক আলোচনা সভা থেকে এ দাবি জানানো হয়।

আলোচনায় বাপা ও সুন্দরবন রক্ষা জাতীয় কমিটির সভাপতি সুলতানা কামাল বলেন, যেখানে সারা বিশ্বে কয়লাভিত্তিক প্রকল্প বন্ধ করা হচ্ছে সেখানে রামপাল প্রকল্পের জন্য সরকার কেন ভারতের নিম্নমানের কয়লা আনছে? সরকার কেন সুন্দরবন নিয়ে অসত্য তথ্য ও বক্তব্য দিয়ে জাতীকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করছে তা জাতি জানতে চায়।

বাপার সহ-সভাপতি রাশেদা কে. চৌধুরী বলেন, বাপা কখনও উন্নয়ন বিরোধী নয়। কিন্তু বাপা কলয়াভিত্তিক প্রকল্পের বিরোধী। সরকার কেন বুঝতে চাচ্ছে না যে, দেশের সাধারণ মানুষ কয়লাভিত্তিক প্রকল্প চাচ্ছে না। ঐতিহ্য রক্ষার ক্ষেত্রে সরকারের অনীহা লক্ষ্য করা যায়। বৈজ্ঞানিক গবেষণা ছাড়া কোনো প্রকল্প গ্রহণ করা যুক্তিযুক্ত হবে না।

মানবাধিকার কর্মী খুশী কবির বলেন, এত প্রশ্নবিদ্ধ একটি প্রকল্প গ্রহণ ও বাস্তবায়নের আগে সরকারকে অবশ্যই সচেতন হওয়া দরকার। আমরা জানতে চাই, যেখানে সারা বিশ্ব কয়লা ভিত্তিক প্রকল্প বন্ধের সিদ্ধান্ত নিয়েছে, সেখানে সরকার কেন কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ প্রকল্প তৈরি করছে। এ বিষয়ে সরকার সঠিকভাবে তথ্য সরবরাহ করছে না। যা দেওয়া হচ্ছে তাও অসংলগ্ন এবং বিচ্ছিন্ন। সরকারের মধ্যে জবাবদিহিতার অভাব লক্ষ্য করা যাচ্ছে। সরকার দেশের ফুসফুস খ্যাত সুন্দরবনকে কেন ধ্বংসের পাঁয়তারা করছে, তা আমরা এদেশের নাগরিক হিসেবে জানতে চাই।

বেলার প্রধান নির্বাহী সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে ইআইএ মূলত একটি গ্রিনওয়াশ। দেশে বিদ্যুতের ওভার ক্যাপাসিটি হওয়ার পরেও কেন রামপালের মতো দূষণকারী কয়লা ভিত্তিক প্রকল্প প্রয়োজন? দেশের ১৪ হাজার ৫০০ কোটি টাকা অলস বসে থাকা বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোতে দেওয়ার জন্য কেন মানুষ সরকারকে ট্যাক্স দেবে? সরকার মূলত রাজনৈতিক ইগো থেকেই এসব প্রকল্প করছে। নবায়নযোগ্য জ্বালানি প্রকল্প গ্রহণ ও বাস্তবায়নসহ সব জীবাশ্ম জ্বালানি বন্ধের আহবান জানাচ্ছি।

আলোচনায় আরও অংশ নেন বাপার সাধারণ সম্পাদক শরীফ জামিল, বাপার নির্বাহী সহ-সভাপতি ও সুন্দরবন রক্ষা জাতীয় কমিটির সদস্য সচিব ডাঃ মোঃ আব্দুল মতিন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষক অধ্যাপক এমএম আকাশ, বেন-এর অন্যতম সংগঠক ও যুক্তরাষ্ট্রের লক হেভেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক অধ্যাপক ড. মোঃ খালেকুজ্জামান, তেল-গ্যাস-খনিজ সম্পদ ও বিদ্যুৎ-বন্দর রক্ষা জাতীয় কমিটির অন্যতম সংগঠক রুহিন হোসেন প্রিন্স এবং কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র বিষয়ে আন্তর্জাতিকভাবে প্রতিষ্ঠিত বিশেষজ্ঞ ও প্রকৌশলী ড. রনজিত সাহু প্রমুখ।

প্রিন্ট