খুলনা | বুধবার | ১৪ মে ২০২৫ | ৩০ বৈশাখ ১৪৩২

আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর দক্ষতায় কঠোর লকডাউন

|
১২:০৬ এ.এম | ০৪ জুলাই ২০২১

সরকার ঘোষিত সাতদিনের কঠোর লকডাউনের তিনদিন পার হয়েছে। সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় দেখা গেছে, লকডাউন বাস্তবায়নে পুলিশ, সেনাবাহিনী, বিজিবি, র‌্যাব ইত্যাদি অসাধারণ ভূমিকা পালন করে চলেছে। অন্য যেকোনো সময়ের লকডাউনের তুলনায় এবারের লকডাউন আক্ষরিক অর্থেই কঠোরভাবে প্রতিপালিত হচ্ছে। যথাযথ দায়িত্ব পালন করলে আমাদের আইনশৃঙ্খলা বাহিনী যে সফল হতে পারে, এবারের লকডাউন দেখে তা প্রতীয়মাণ হয়েছে। তারা অত্যন্ত দক্ষতার সাথে অর্পিত দায়িত্ব পালন করছে। কঠোর এই লকডাউনে মানুষের মধ্যে আইনভাঙার প্রবণতাও কম দেখা গেছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সবকিছু কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ করছে। প্রথম দিন বিনা কারণে ঘর থেকে বের হওয়া এবং যথাযথ কারণ দেখাতে না পারায় ৭৫৫ জনকে আটক করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। তাদের কাউকে বুঝিয়ে, কাউকে জরিমানা করে ঘরে পাঠিয়ে দেয়া হয়েছে।
বলার অপেক্ষা রাখে না, এতদিন লকডাউন কেবল নামে ছিল, বাস্তবে তা প্রতিপালিত হয়নি। এবার সরকারের সকল পক্ষ সক্রিয় ও কঠোর অবস্থান নেয়ায় প্রথমদিন থেকেই লকডাউনের আসল রূপ দেখা গেছে। এজন্য, পুলিশ, সেনাবাহিনী, বিজিবি, র‌্যাবসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর আন্তরিকতা প্রণিধানযোগ্য। যেহেতু মূল কাজটি পুলিশকে করতে হয়, তাই তারা তাদের কাজটি যথাযথভাবে পালন করছে। এজন্য পুলিশের আইজিপি ও পুরো বাহিনী ধন্যবাদ পাওয়ার যোগ্য। তাদের আমরা মোবারকবাদ জানাই। অন্যান্য বাহিনীকেও অর্পিত দায়িত্ব যথাযথভাবে পালনের জন্য ধন্যবাদ জানাই।
দেশে বিগত দুই সপ্তাহের অধিক সময় ধরে যেভাবে করোনায় আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে, তাতে কঠোর লাকডাউন দেয়া ছাড়া বিকল্প আর কিছু ছিল না। ইতোমধ্যে খুলনা, সাতক্ষীরা ও ফেনীতে অক্সিজেন সঙ্কটে অনেকের মৃত্যু হয়েছে। এ প্রেক্ষিতে, কঠোর ও জিরো টলারেন্সের লকডাউন দেয়া ছাড়া অন্য কোনো উপায় ছিল না। নিরূপায় হয়েই সরকারকে এ সিদ্ধান্ত নিতে হয়েছে। আশা করা যায়, দেশব্যাপী সাতদিনের কঠোর লকডাউনের মাধ্যমে করোনার উর্ধ্বমুখিতায় কিছুটা হলেও রাস টানা যাবে।
সুখবর হচ্ছে, বিদেশ থেকে টিকা আসা শুরু হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের মর্ডানার ২৫ লাখ এবং চীনের সিনোফার্মের ২০ লাখ টিকা আসছে। গত শুক্রবার রাতে যুক্তরাষ্ট্র থেকে মর্ডানার ২৫ লাখ টিকার মধ্যে ১২ লাখ এসেছে।  বাকি ১৩ লাখ টিকা আসবে। একই সঙ্গে সিনোফার্মের ১১ লাখ টিকা এসেছে। গত শনিবার ভোরে এসেছে ৯ লাখ ডোজ। এছাড়া অন্যান্য উৎস থেকে টিকা আনার কার্যক্রম জোরোসোরে শুরু হয়েছে। আশা করা হচ্ছে, চলতি সপ্তাহ থেকে গণটিকা কার্যক্রম শুরু হবে। লকডাউন ও গণটিকা প্রদান কার্যক্রম একসঙ্গে শুরু হলে আশা করা যায়, ঈদের আগে করোনা নিয়ন্ত্রণের সুফল পাওয়া যাবে। তবে কঠোর লকডাউনে দরিদ্র ও শ্রমজীবী মানুষ যে নিদারুণ কষ্টের মধ্যে পড়েছে, তা অস্বীকার করার উপায় নেই। তাদের কাজকর্ম বন্ধ হয়ে গেছে। এ অবস্থায় তাদের খাদ্য সংস্থান করা জরুরি। তা-নাহলে, অনেকে বাধ্য হয়ে ঘর থেকে বের হয়ে আসবে। বিষয়টি সরকারের বিবেচনায় নেয়া দরকার। এলাকার জনপ্রতিনিধি ও প্রশাসনের পক্ষ থেকে লকডাউন চলাকালে অনতিবিলম্বে দরিদ্রদের খাদ্য সংস্থানের ব্যবস্থা করতে হবে।

প্রিন্ট

আরও খবর