খুলনা | বুধবার | ১৪ মে ২০২৫ | ৩০ বৈশাখ ১৪৩২

করোনায় নাকাল মানুষ

|
১২:০৯ এ.এম | ৩০ জুন ২০২১

করোনার সংক্রমণ মোকাবিলায় ‘কঠোর লকডাউন আসছে’, সরকারের এ সিদ্ধান্ত নেয়ার পরই বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের মধ্যে অস্থিরতা দেখা যায়। প্রথমত, বাজারে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য কেনার জন্য তারা হুমড়ি খেয়ে পড়ে। দ্বিতীয়ত, ঢাকা থেকে ঘরমুখী মানুষের কাফেলাও দীর্ঘতর হয়। বাজারগুলোতে ক্রেতার ভিড় অনেক বেশি। স্বাভাবিক অবস্থায় মানুষ যে পরিমাণ পণ্য কেনে, এবার কিনেছে তার চেয়ে অনেক বেশি। এই সুযোগে বিক্রেতারা সবজি থেকে প্রায় প্রতিটি নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম বাড়িয়ে দিয়েছেন।
বিভিন্ন গণমাধ্যমের খবর অনুযায়ী, ২৪ ঘন্টার ব্যবধানে আলু ও পেঁয়াজের দাম কেজিতে বেড়েছে ৫ টাকা, মসুর ডাল ৫ থেকে ১০ টাকা। ডিমের দাম ডজনে ৫ টাকা বেড়ে হয়েছে ১০৫ টাকা, দেশি মুরগি কেজিতে ৫০ টাকা বেড়ে হয়েছে ৫৩০, চীনা আদা কেজিতে বেড়েছে ২০ টাকা। এ ছাড়া বোতলজাত সয়াবিন তেল, ময়দা, চিনি, শুকনা মরিচ, হলুদসহ বেশ কিছু পণ্যের দামও বেড়েছে। লকডাউনের বিষয়ে ঘন ঘন সরকারের সিদ্ধান্ত বদলের কারণে এই যে ক্রেতাসাধারণের ‘পকেট কাটা’ গেল, তার দায় কে নেবে?
অন্যদিকে কঠোর লকডাউনের ঘোষণা পেয়ে লাখ লাখ মানুষ ঢাকা ছেড়েছে গ্রামের বাড়িতে যাওয়ার উদ্দেশ্যে। গণপরিবহন বন্ধ থাকলেও জনস্রোত ঠেকানো যায়নি। প্রতিটি ফেরিঘাটে উপচে পড়া ভিড়। রিকশা, মোটরসাইকেল, অটোরিকশা, মাইক্রোবাস, পিকআপ ও ট্রাকে করে মানুষ জীবনের ঝুঁকি নিয়ে যে যার গন্তব্যে যাচ্ছে। অনেকে চার-পাঁচ গুণ ভাড়া দিয়ে দূরের গন্তব্যে পৌঁছেছে। লকডাউনে কাজ হারিয়ে ফেলতে পারেন, এ আশঙ্কায় হতদরিদ্র লোকজন ঢাকা ছেড়েছেন। আবার কিছু মানুষ হুজুগে জনস্রোতে শামিল হয়েছে। গত ঈদেও একই চিত্র দেখা গেছে। তবে সেই সময়ের চেয়ে এই সময়ের একটি মৌলিক পার্থক্য আছে। গত ঈদের সময় শহরাঞ্চলেই করোনার সংক্রমণ বেশি ছিল। গ্রাম অনেকটা নিরাপদ। এবার শহর-গ্রাম নির্বিশেষে করোনার সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়েছে। এ অবস্থায় গাদাগাদি করে দীর্ঘ পথ যাওয়া ঝুঁকি বাড়িয়ে দেবে। তিন দিন আগে সরকার কঠোর ঘোষণা দিয়ে না রাখলেও মানুষ বাড়ি যেত, কিন্তু তখন ভিড় কিছুটা কম হতো। বাজারেও কেনাকাটার জন্য তারা হুমড়ি খেয়ে পড়ত না। নানা রকম বিধি-নিষেধ সত্তে¡ও ঢাকা ও মহাসড়কগুলোতে যানজট ঝুঁকি আরও বাড়িয়ে দিয়েছে।
পাইকারি ব্যবসায়ীরা বলছেন, বাজারে পণ্যের প্রচুর মজুত আছে। সে ক্ষেত্রে দাম বাড়ার কথা নয়। তারপরও একশ্রেণির অসাধু ব্যবসায়ী দাম বাড়িয়েই চলেছেন। তাঁরা ক্রেতাদের পোড়া ঘরে আলু পুড়তে না পারলেও তাঁদের কাছ থেকে বাড়তি টাকা নিচ্ছেন। এখনই বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের তড়িৎ ব্যবস্থা নেয়া দরকার, নইলে মধ্য ও নিম্ন আয়ের মানুষ এ মহামারীতে ক্ষতিগ্রস্ত হবে।
 

প্রিন্ট

আরও খবর